মুঘলদের সামরিক ব্যবস্থা - মেহরাব হক খান
পদাতিক বাহিনীঃ যুদ্ধের বাইরে যুদ্ধ বিষয়ক কাজের দায়িত্ব পালন করত এই পদাতিক বাহিনী। যার কারণে যোদ্ধা নয়, এমন ব্যক্তিও এখানে নিয়োগ পেত। পদাতিক বাহিনিতে আহাশিম ও সিবান্দি নামের দুটি শাখা ছিল। আহাশিম শাখার যোদ্ধারা যুদ্ধ করলেও সিবান্দি শাখার সৈনিকরা যুদ্ধ করত না।
অশ্বারোহী বাহিনীঃ আরব ও তুর্কিদের মতো মুঘলদেরও মুল শক্তি ছিল অশ্বারোহী বাহিনী। অশ্বারোহী বাহিনী দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। একটি ছিল বারগির ও আরেকটি সিলহাদার। বারগির শাখার সৈনিকরা রাজকীয় অস্ত্র ও বস্ত্র পেত তাই এদের বেতন কম ছিল। আর সিলহাদার শাখার সৈনিকদের অস্ত্র, বস্ত্র নিজেদেরই যোগাড় করতে হতো। তাই এদের বেতন বেশি ছিল।
হস্তি বাহিনীঃ সম্রাট আকবরের সময় প্রথম হস্তি বাহিনী গঠন করা হয়। তিনি নিজে হাতি পছন্দ করতেন। একজন সেনাপতি ও একজন মাহুত দ্বারা প্রতিটি হাতি পরিচালিত হতো। হস্তি বাহিনির সেনাপতিদের শান ই ফীল বলা হতো।
গোলন্দাজ বাহিনীঃ বাবরের সময় ভারতবর্ষে প্রথম গোলান্দাজ বাহিনীর ব্যবহার করা হয়। তখনকার সময়ের কামান ও রকেট প্রচুর ভারী ছিল। তবে আকবরের সময় গোলান্দাজ বাহিনীর আধুনিকায়ন করা হয়। তিনি হালকা কামানের ব্যবহার শুরু করেন। মুঘল গোলান্দাজ বাহিনিতে সেনাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতো ইউরোপিয় ও তুর্কি সমর বিশারদদের। এই বাহিনী জিনসী ও দাসতী নামের শ্রেনিতে বিভক্ত ছিল। জিনসীর সৈনিকরা দেখভাল করতো ভারি কামান ও দাসতীর সৈনিকরা দেখভাল করত হালকা কামান। এই প্রধানদের বলা হতো মীর ই আতিশ।
নৌবাহিনীঃ মুঘলদের তেমন কোন শক্তিশালী নৌবাহিনী ছিল না। শুধু মাত্র পশ্চিম ভারত রক্ষা করার জন্য কিছু নৌকা নিয়ে নামমাত্র নৌ বাহিনী গঠন করা হয়েছিল। তবে বাংলা আক্রমনের জন্য একটি অস্থায়ী শক্তিশালী নৌবহর গঠন করতে হয়েছিল। নৌ জেনারেলদের বলা হতো মীর ই বহর।
মুঘল সেনাবহিনী নিয়মিত কুচকাওয়াজ না করায় ১৭০০ সালের শুরুর দিক থেকে তাদের সামরিক শক্তি ক্রমশ কমতে থাকে ।
তথ্যসূত্র: ঘটনা.কম