#HTTP_Cookies

যখনই আমরা কোন ওয়েবসাইটে গিয়ে আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য খূজি, একটা খুবই পরিচিত পরিস্থিতির সম্মুখীন আমরা হই, যেটা খানিকটা এমন,

"This website uses cookies, please accept cookies. "

বেশিরভাগ সময় এমন নোটিফিকেশনে আমরা যতদ্রুত সম্ভব এক্সসেপ্ট বাটন ক্লিক করে আমাদের কাজের জন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি। কিন্তু আসলে এই কুকি ব্যাপারটা কী?  



# What is cookies?

প্রথমত এখানে কুকি কোন গোল বিস্কিট জাতীয় কিছু নয়, যেটা চায়ের কাপে ডোবালেই অর্ধেকটা পড়ে যায়। কুকি বলতে এখানে মূলত বোঝানো হচ্ছে Online cookies, আরো কেতাবী নামে 'HTTP Cookies.'

তো আসলে কুকি কী?

এটা এক খন্ড ইনফরমেশন এক্সসেস যেটা ওয়েবসাইট থেকে ইউজারের ডিভাইসে যায়। সহজ ভাষায়, যতবারই আপনি একটা কুকির নোটিফিকেশন এক্সসেপ্ট করেন, এর মানে আপনি সেই ওয়েবসাইটের একটা ইনফরমেশন এর খন্ড আপনার ফোনে বা কম্পিউটারে আসার অনুমতি দিচ্ছেন।

এখানে প্রাইভেসির একটা মারাত্মক হুমকি থাকলেও সুখবর যে বেশিরভাগ ওয়েবসাইট এই এক্সসেস নেয় শুধুমাত্র মারকেটিং করার উদ্দেশ্য।  এইজন্য হয়তো আপনি যদি কখনো গুগলের কোন ওয়েবসাইটে ক্রিকেট ব্যাটের সার্চ করেন,আপনার ফেসবুকে একই ধরনের কিছু বিজ্ঞাপন চলে আসে ব্যাট সংক্রান্ত।

এসব ছাড়াও একজন ইউজার কতবার ওয়েবসাইট ভিজিট করছে, কী ধরনের তথ্য খুজতে চাইছে সেসব ও ট্র‍্যাক করে নিতে পারে এই ইন্টারনেট বিস্কুট।  

# HTTP Cookies এর উৎপত্তি কখন, কোথায়, কীভাবে?

কুকির কোন ঐতিহাসিক ব্যকরাউন্ড না দিলে ইতিহাসনামাতে ব্যাপারটা পুরোপুরি অপরাধ হয়ে যায়।

 ইন্টারনেট কুকিজ এর উৎপত্তিকাল সাল ১৯৯৪, ২৪ বছর বয়সী, Netscape Communications এর লু মান্টুলি নামের এক তরুণ কম্পিউটার প্রোগ্রামারের হাত ধরে।

Netscape Communications ছিল মূলত একটা অনলাইন স্টোর এবং ওয়েব সার্ভিস কোম্পানি। অনলাইন স্টোর হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ হলো কাস্টোমার ইনফরমেশন, বা ক্রেতার সম্পর্কিত তথ্য। তবি প্রতিটি আলাদা ক্রেতা সম্পর্কে আলাদাভাবে তথ্য জোগাড় করা শুধু সময়সাপেক্ষই ছিল না, তাদের নিজেদের সার্ভারের ওপরেও বেশ লোড পড়ছিল।

তাই লুকে কোম্পানি দায়িত্ব দেয় এমন কোন উপায় বের কারার যেন তথ্য ক্রেতার কম্পিউটারেই থেকে যায় এবং সেখানে গিয়েই যাতে পাওয়া যায়। নিজেদের সার্ভারের ওপরে যেন চাপ না পড়ে।

আইটি জগতে আগে থেকেই "magic cookie" এর একটা কনসেপ্ট ছিল, যার মূল কাজ ওয়েবসাইটে ক্রেতা কতবার প্রবেশ করেছে তা চেক করা।

লুই সেই ব্যাপারটাই আবার তৈরি করে, তবে এবার আরো ক্ষমতাসম্পন্ন। এবার শুধু কতবার লগ ইনই না, কী ধরনের তথ্য খোজা হচ্ছে, কোন ক্রেতা কতবার প্রবেশ করছে সব জানা যাবে, সেটা আবার কোম্পানির সার্ভারে আলাদা ফাইল তৈরি না করেই।

 


# কুকি কীভাবে কাজ করে?

সহজ ভাষায়, যখনই আমরা কোন ওয়েবসাইটে প্রথমবারের মত ভিজিট করি। কুকি এক্সসেপ্ট করার সাথে সাথেই একটা ইনফরমেশন কুকি ওয়েবসাইট থেকে আমাদের হার্ড ড্রাইভে প্রবেশ করে। এখানে মনে রাখতে হবে এই ইনফরমেশন  টা সেই ওয়েবসাইটের অন্তর্ভুক্ত।

এরপর আমাদের স্ক্রিন টাইম, কী ধরনের আইটেম আমরা দেখছি, বা কেমন তথ্য খোজা হচ্ছে সব তথ্য সেই কুকিতে সংরক্ষিত থাকে।

তবে আরেকটা ব্যাপার হলো Third Party Cookie.

অনেক সময় দেখা যায়, আমাদের ইনফরমেশন একটা ওয়েবসাইট থেকে ফেসবুকেও চলে যায়। সেটার কারণ হলো এই Third Party Cookie.

অর্থাৎ এখানে ফেসবুক তাদের নিজস্ব কুকি এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনার ডিভাইসে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

এই পর্যায়ে নিজের ডাটা প্রাইভেসির কথা ভেবে মাথার চুল যাতে ছিড়তে না হয়, সেজন্য GDPR ( General Data Protection Regulation) এইসকল ডাটা ব্যাবহারে ক্ষমতা মুক্তি দেয় এবং ইউজারের মাথার বাকি থাকা মূল্যবান চুল ছেড়া থেকে রক্ষা করে।

সত্যি বলতে ইন্টারনেট কুকির ভালো মন্দ দুই দিকই রয়েছে, ওয়েবসাইট গুলোর উদ্দেশ্যর উপর নির্ভর করে সবটাই। এ পর্যায়ে চাইলে ইউজারের তথ্য ব্যাবহার করে অনেক কিছুই ম্যানিপুলেট করতে পারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। আবার আপনার প্রিয় ক্রিকেট ব্যাট গুগলে খুজে না পেলেও পছন্দের ব্যাটটি পেয়ে যেতে পারেন ফেসবুকের অন্য এড এর মাধ্যমে।  

রাইয়ান শাফিন
কিছু জানতে পারা যাবে না জেনেও জানার চেষ্টা চালাচ্ছি, অবসরে খই ভাজি। ধন্যবাদ।