বাংলা মায়ের আঁচল তলে ঋতু আছে ছ'টি
গ্রীষ্ম আসে অনল নিয়ে, কালবোশেখি সাথে
আম-কাঠালের গন্ধ ভাসে রাস্তা-ঘাটে-মাঠে
ভীষণ গরম পুড়িয়ে দেয়, উড়িয়ে দেয় ঝড়ে
গ্রীষ্ম মানেই নাগরদোলা, খুশির বরাত ঘরে।
কালবোশেখির লেজুড় ধরে বর্ষা আসে হেথায়
দিন-রাত ভুলে ঝড়ে বাদল, কাঁদে যেন ব্যথায়!
বর্ষা মানেই মাটির গন্ধ, ব্যাঙের ঘ্যাঙরঘ্যাঙ
পিছল কাদায় আছাড় খেয়ে ভেঙে ফেলা ঠ্যাঙ!
খই-মুড়ি আর গুড়ের সাথে সন্ধ্যেটা হয় বেশ
বর্ষা মানেই চিরচেনা আমার বাংলাদেশ।
সাদা মেঘের টুকরো নিয়ে শরত আসে হেসে
আকাশজুড়ে নীলের মাঝে সাদা বরফ ভাসে।
শরত মানেই কাশফুলের সাদা রঙের ধুম
পদ্মপাতা-শাপলা ফুলে ডাহুক পাখির ঘুম।
পাকা ধানের সুবাস নিয়ে হেমন্তের আগমন
নবান্ন উৎসবে জুড়ায় কৃষক গিন্নীর মন।
নতুন ধানে গোলা ভরে, সবার মুখে হাসি
পিঠাপুলির হেমন্ত তাই সবাই ভালোবাসি।
ঘাসের ডগায় শিশির নিয়ে শীত আসে দোরে
খেজুর রসের মিঠা বানাই শিশির ভেজা ভোরে
ভাপা পিঠার আয়োজনে আড্ডা উনুন পাড়ে
মাঘের শীতে বাঘও কাবু, কাঁপন জাগে হাড়ে।
শীত সকালে আগুন জ্বেলে আসর জমে বেশ
কাথা টেনে ঘুমিয়ে পরে আমার সোনার দেশ।
ফাগুন আসে আগুন হয়ে কৃষ্ণচূড়া ডালে
প্রকৃতি তার রঙ ফিরে পায় বসন্তের আড়ালে
দখিণ হাওয়া মাতাল রূপে তোলে আলোড়ন
পাখির ডাকে মুগ্ধ শহর, প্রাণ ফিরে পায় বন।
ষড়ঋতুর মধুর চক্রে বন্দি আমার দেশ
অনল-বাদল-শীতের সাথে হেথায় আছি বেশ!