আমি দেখতে পেলাম ট্রয় নগরী পুড়ে ছাই হচ্ছে!
আমার বুকের ভেতর সুখের মতো ব্যথা বেজে ওঠে,
হাসির ঝংকারে চূর্ণবিচূর্ণ হয় জগৎ সংসার।
আপনি কথা বললেন,
আমি শুনতে পেলাম ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ সরোদে সুর তুলছেন!
খড়কুটোর মতো সেই সুরের মূর্ছনায় ভেসে যাই আমি,
সরোদের তার হতে না পারার আফসোসে কেঁদে মরি।
আপনি চোখ তুলে তাকালেন,
সেই দৃষ্টিতে ডুবে গিয়ে আমি বিষাদগ্রস্ত জীবনানন্দকে দেখলাম!
কলকাতার যে রাস্তায় কেউ কোনদিন ট্রামে চাপা পড়েনি,
সেই রাস্তায় জীবনবাবুর আত্মাহুতির রহস্য খুঁজে পেলাম আমি!
আপনি আমার নাম ধরে ডাকলেন,
আমি মেসোপোটেমিয় সভ্যতার মতো জেগে উঠলাম!
টাইগ্রিস-ইউফ্রেতিসের কূলে বসন্ত এলো যেন,
নীলনদে ঢেউয়েরা যেন উদয় শঙ্করের নৃত্যের ছন্দ তুললো!
আপনি কবিতা বললেন,
আমি সিসিফাজের মতো দেবতা জিউসের শাস্তি মাথা পেতে নিলাম!
মহাকাল আমার বোকামির জন্য দোষারোপ করলো,
তবুও,অনন্তকাল ধরে পাথরখন্ড বয়ে বেড়ানোর যন্ত্রণা আপনার জন্য তুচ্ছজ্ঞান হলো।
আমার আকুলতা ভরা পত্র পেয়ে আপনি বললেন,
"ধন্য সেই পুরুষ যার জন্য তোমার তীব্র হাহাকার!"
অথচ প্রেমের অর্ঘ্য আমি শুধু আপনাকেই দিতে চেয়েছিলাম।
আপনি ফিরেও তাকালেন না,
আমি বললাম-"তবে আশীর্বাদ করুন, আমি যেন তাকে পাই."
আপনি বললেন,"বিচ্ছেদের সুখ যদি বুঝতে, তবে মিলন তুচ্ছ মনে হতো!"
রোম নগরীর মতো আমি পুড়ছিলাম,
আপনি তখন নিরোর মতো বাঁশি বাজাচ্ছিলেন!
+লেখক: রেদওয়ানা তাবাসসুম বহ্নি
মানুষের ডাক্তার হবার কার্যক্রম শেষ। কিন্তু মেডিকেলের কঠিন পড়াশোনা কোনদিনই ভালো লাগেনি। তারচেয়ে বরং বিষন্ন সন্ধ্যায় ইতিউতি জীবনানন্দকে খুঁজি।
ফেসবুক লিংক:আইডি লিংক